এই লিখাটা আমি সম্পূর্ন আমার নিজের মতামত থেকে লিখছি। খুব সহজ ১০-টি উপায়ে আমরা সঞ্চয় করতে পারি। আমরা সব সময়ই ভুলে যাই আমাদের সঞ্চয় করা উচিত।
আমাদের কাছে অনেক উপায় আছে টাকা সঞ্চয় করার কিন্তু ভেবে দেখুন আমরা সব সময়ই বেখায়ালি থাকি এই ব্যাপারে। হঠাৎ যখন আপনি খেয়াল করেন যে আপনার কাছে আপাতত কোনো টাকা নেই ঠিক তখনই বুঝতে পারেন আগে থেকেই সঞ্চয় করা উচিত ছিল। আপনার কষ্ট করে অর্জন করা টাকা কিভাবে ব্যয় করছেন অথবা ব্যবহার করছেন সেটা আপনার জীবনে অনেক অংশে প্রভাব ফেলবে। কিছু সহজ নিয়মকে অনুসরণ করলে আপনার জন্য সঞ্চয় করাটা খুব সহজ হয়ে যাবে। আমাদের সকলের উচিত ভবিষ্যৎকে সুন্দর করার জন্য সঞ্চয় করা।
তাহলে আর কথা না বারিয়ে চলুন জেনে নেই সঞ্চয় করার ১০টি সহজ উপায়।
১। সর্বপ্রথম জানুন আপনার আয় ও ব্যয় কতটুকুঃ সব কিছুর আগে আপনাকে জানতে হবে আপনার আয় ও ব্যয় কতটুকু। আপনি কত টাকা আয় করছেন ও কত টাকা ব্যয় করছেন। আপনি যদি নিজে যাচাই করে বুঝে উঠতে না পারেন যে আপনার মাসিক আয়ের তুলনাতে ব্যয় বেশি না কম তাহলে আপনি সঞ্চয় করা থেকে অনেকটা পিছিয়ে গেলেন।
২। মাসিক হিসাবের একটি তালিকা তৈরি করুনঃ আয় ও ব্যয়ের পার্থক্যটা বুঝার পর তার একটি মাসিক হিসাব খাতা তৈরি করুন যেমন একটি খাতা কিনে তাতে আপনার সর্বমোট আয় ও ব্যয় আলাদা আলাদা ভাগে লিখুন। প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় গুলোকে আলাদা করে লিখবেন। আর একটি আলদা জামার অংশ লিখবেন যেখানে আপনি যতুটুকু টাকা জমাতে পারবেন লিখে রাখবেন। প্রতিদিন কি কি খরচ আপনি করছেন সেটা লিখবেন। ছোট ছোট খরচ গুলোও লিখবেন। যদি আপনার লিখে রাখার সময়ের সল্পতা থাকে আপনি ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। এখন আমাদের সবার কাছেই কমবেশি স্মার্টফোন আছে। সেখানে নোট করে রাখতে পারেন।
৩। মাসের শুরুতে একটা পরিমিত টাকা জমিয়ে রাখুনঃ আপনার মাসিক খরচ শুরু করার আগে কিছু পরিমান টাকা আলাদা ভাবে কোথাও জমিয়ে রাখুন। সেটা হতে পারে আপনার টেবিলের ড্রয়ার, মাটির ব্যাংক অথবা কোনো ব্যাংকে। তাহলে বছর শেষে দেখবেন বেশ কিছু টাকা আপনি জমিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু আপনাকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে কোনোভাবে জমানো টাকাগুলো খরচ করা যাবে না।
৪। অযাচিত খরচ বন্ধ করার চেষ্টা করুনঃ আমি বলবো না আপনি সব বন্ধ করে দিন। কিন্তু যেই জিনিসগুলো না কিনলে আপনার তেমন কোনো ক্ষতি হচ্ছে না সেগুলো না হয় নাই কিনুন। যেমন ধরুন প্রতি মাসে তিনবার শপিং না করে একবার করুন। এইভাবে অল্প অল্প করে চেস্টা করতে করতে আপনি অনেকটাই মানিয়ে নিতে শিখে যাবেন। তারপর দেখবেন মাস শেষে আপনার অযাচিত খরচ গুলো অনেকটাই কমে গিয়েছে।
৫। সাপ্তাহিক অথবা মাসিক কেনাকাটা করার চেষ্টা করুনঃ খুচরো খুচরো কোনো কিছু কিনতে গেলে দেখবেন প্রতিদিনই প্রায় অনেক কিছু কিনে ফেলছেন। তাই অল্প অল্প করে প্রতিদিন না কিনে সাপ্তাহিক অথাবা মাসিক কেনাকাটা করার চেষ্টা করুন। দেখবেন অনেকটাই খরচ কমে আসছে আপনার৷
৬। অনলাইনে কেনাকাটা কম করুনঃ বর্তমানে প্রায় আমরা সকলেই প্রযুক্তি নির্ভর। ঘরে বসে কেনাকাটা করতে যেয়ে আমরা কখনোই পন্যের মান অথাবা দাম নিয়ে চিন্তা করি না। এটা একদম ঠিক নয়। অবশ্যই অনলাইন থেকে কিছু কিনতে চাইলে আমাদের কয়েকটি সাইট অথাবা পেজ ঘুরে পন্যের সঠিক দাম জেনে তবেই কিনতে হবে।
৭। একটি ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলুনঃ এটি করার একমাত্র উদ্দেশ্য থাকবে আপনি যদি টাকা জমিয়ে রাখতে ভুলেও যান তাহলে ব্যাংক নিজে আপনার মাসিক বেতন থেকে টাকা রেখে দিবে। আপনি প্রয়োজনে বীমা পলিসিও করতে পারেন।
৮। দরদাম করতে শিখুনঃ অনেকেই আছেন যারা দরদাম করতে চান না অথবা লজ্জা পান। একটু লজ্জা পেলেও দরদাম করে কয়েকটি দোকান ঘুরে কিনতে পারলে আপনি যেমন ভালো পন্যটি পাচ্ছেন তেমন কিছুটা টাকাও সঞ্চয় করতে পারছেন। এতে লাভটা কিন্তু আপনারই।
৯। রেস্টুরেন্টে খাওয়া কমিয়ে দেয়ার চেস্টা করুনঃ আমরা অনেকেই আছি যারা প্রায়ই রেস্টুরেন্টে খেতে পছন্দ করি বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে। আমি বলবো না আপনি এটি করা বন্ধ করে দিন। কিন্তু বলবো একদমই কমিয়ে দিন। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে আমরা অনেক সময় এমন মেন্যু পছন্দ করে থাকি যেগুলো বাসায় বানিয়ে খেলে অনেক সল্প মূল্যে খেতে পারি। অথবা আমরা অনেকবার না খেয়ে মাসে একবার অথবা দুইবার বাইরে খেতে পারি অথবা বন্ধুদের বাসায় দাওয়াত দিয়ে খেতে পারি। এতে আমাদের টাকা ও খাবার দুটোর অপচয়ই কম হবে।
১০। বিনোদনে অপচয় কমিয়ে দিনঃ অনেকেই আছি যারা বিনেদোনে অপচয় করি সময় ও টাকা দুটোই। যেমন ধুরুন ইন্টারনেটে মুভি অথবা সিরিজ দেখা। একটা সময় ছিল যখন আমরা ডিশ এন্টিনার মাধ্যমে টেলিভিশন দেখতাম। কিন্তু এখন সে সব একদম দরকার হয় না। ডিজিটাল যুগে আমরা ইন্টারনেটে টাকা দিয়ে পৃথিবীর যেকোনো কিছু দেখতে পাচ্ছি। এটি করা কমিয়ে দিন।
সবশেষে এইটুকুই বলা যায় ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আমরা একটু কষ্ট করতে পারলেই কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য অনেক কিছু জমিয়ে রাখতে পারি। আশা করি সঞ্চয় করার এই ১০ টি উপায় আপনাকে অনেকটাই সাহায্য করবে।